শাক-সবজি আমাদের শরীরের ভিটামিন ও খনিজ পর্দাথের উৎস। সুতরাং শাক-সবজি যত টাটকা খাওয়া যায় ততই ভাল। স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য শহরের বাসিন্দারা টাটকা সবজির জন্য মূলত বাজারের উপর নির্ভরশীল। অথচ অল্প পরিশ্রমেই বাড়ির ছাদে, বারান্দায়, কার্ণিশে, বড়-মাঝারি-ছোট বিভিন্ন আকারের টবে পছন্দ মাফিক শাক-সবজির আবাদ করতে পারে। টবে আবাদযোগ্য শাক-সবজি হল টমেটো, বেগুন, মরিচ, শশা, ঝিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুটি, কলমি শুটি, কলমি শাক, লাউ, পুঁই শাক, পেঁপে, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, থানকুঁনি, লেটুস, ব্রোকলি ইত্যাদি।
টবের বীজতলার মাটি:
শাক-সবজির বীজতলার জন্য মাটি হতে হবে ঝুরঝুরে, হালকা এবং পানি ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। মাটি চালনি দিয়ে চেলে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। দুই ভাগ বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে দুই ভাগ জৈব সার মিলিয়ে নিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করে নিতে হয়। মাটি যদি এঁটেল হয় তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগমের সুবিধার জন্য একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে। মাটিকে শোধন করে জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে চারাকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করা সহজ। সাধারণত এক লিটার ফরমালডিহাইড শতকরা ৪০ ভাগ ৪০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এই দ্রবণের ২৫ লিটার প্রতি ঘন মিটার মাটিতে কয়েক কিস্তিতে ভিজিয়ে দিতে হয়। এরপর দু'দিন চটের কাপড় দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে পরে চট উঠিয়ে দিলে মাটি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।
বীজ বপন ও সেচ:
আগের নিয়মে মাটি হালকা ঝুরঝুরে করে টবের উপরের ভাগ সমতল করতে হবে। খুব হালকাভাবে বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে টবের ভেতর। এরপর জৈব সার দিয়ে বীজগুলোকে ঢেকে দিতে হবে। পানি দিতে হবে নিয়মিত ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত ঝাজরি দিয়ে। লক্ষ্য রাখতে হবে, পানির ঝাপটায় যাতে বীজের উপর জৈব সারের আবরণ সরে না যায়। যে সব বীজ আকারে ছোট সেগুলোর ক্ষেত্রে উপর দিয়ে পানি দিলে বীজগুলো পানির ধাক্কায় একস্থানে অঙ্কুরোদগমে ব্যঘাত ঘটতে পারে। তাই সব টবের উপর দিয়ে পানি না দিয়ে তলা দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করা উচিত।
পরিচর্যা:
অনেক সময় শাক-সবজির চারা, বিভিন্ন প্রকার পাখি, পিঁপড়া, মাকড়সা ইত্যাদি নষ্ট করে ফেলতে পারে। তার জন্য হেপ্টোক্লোর ৪০ পরিমাণ মত দিয়ে যাবতীয় পিঁপড়া ও মাকড়সার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করা যায়। তবে পাখির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে হলে টবের উপর তারের বা নাইলনের জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় টবের মাটিতে বীজ বপনের আগে বিভিন্ন প্রকার আগাছা জন্মাতে পারে। আগাছাগুলো নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিতে হবে। টবে চারা জন্মালে চারার গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, শাক-সবজি টবগুলোতে অবশ্যই আলো-বাতাস পায় এমন জায়গায় রাখা দরকার। তবে অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টি-রোদ-তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য সাময়িকভাবে টব নিরাপদ স্থানে সরানো যেতে পারে।
সবজি সংগ্রহ:
সবজি সময় মত সংগ্রহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সবজি বেশিদিন গাছে না রেখে বেশি পোক্ত না করে নরম থাকতেই তুলে খাওয়া ভাল। এতে করে একদিকে যেমন নরম খাওয়া যায় অন্যদিক গাছে আরও বেশি সবজি আসে। সবজি গাছ থেকে ছিঁড়ে সংগ্রহ করা যাবে না। আস্তে করে কেটে সংগ্রহ করতে হবে। তাহলে সবজি গাছের কোন ক্ষতি হবে না।
টবে সবজি আবাদের সুবিধা:
টবে সবজি আবাদের বিশেষ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। যেমন- প্রাকৃতিক দূযোর্গ, প্রচণ্ড গরম, অতিরিক্ত বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝা ইত্যাদির কবল থেকে টবের সবজিকে রক্ষা করা যায় স্থানান-র করে। পশু-পাখির উপদ্রব থেকে বাঁচানো যায় জাল দিয়ে ঘিরে রেখে। সংসারের অব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাত্র ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে আনা যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি অপব্যয় হয় না। নিজেরা তৈরি করে জৈব সার ব্যবহার করা যায় সবজিতে। ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এগুলো সাজিয়ে রাখা যায় ঘরের বিভিন্ন জায়গায়।
লেখক: বকুল হাসান খান
এগ্রোবাংলা ডটকম
টবের বীজতলার মাটি:
শাক-সবজির বীজতলার জন্য মাটি হতে হবে ঝুরঝুরে, হালকা এবং পানি ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। মাটি চালনি দিয়ে চেলে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। দুই ভাগ বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে দুই ভাগ জৈব সার মিলিয়ে নিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করে নিতে হয়। মাটি যদি এঁটেল হয় তাহলে বীজের অঙ্কুরোদগমের সুবিধার জন্য একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে। মাটিকে শোধন করে জীবাণুমুক্ত করে নিয়ে চারাকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করা সহজ। সাধারণত এক লিটার ফরমালডিহাইড শতকরা ৪০ ভাগ ৪০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এই দ্রবণের ২৫ লিটার প্রতি ঘন মিটার মাটিতে কয়েক কিস্তিতে ভিজিয়ে দিতে হয়। এরপর দু'দিন চটের কাপড় দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে পরে চট উঠিয়ে দিলে মাটি জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে।
বীজ বপন ও সেচ:
আগের নিয়মে মাটি হালকা ঝুরঝুরে করে টবের উপরের ভাগ সমতল করতে হবে। খুব হালকাভাবে বীজ ছড়িয়ে দিতে হবে টবের ভেতর। এরপর জৈব সার দিয়ে বীজগুলোকে ঢেকে দিতে হবে। পানি দিতে হবে নিয়মিত ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত ঝাজরি দিয়ে। লক্ষ্য রাখতে হবে, পানির ঝাপটায় যাতে বীজের উপর জৈব সারের আবরণ সরে না যায়। যে সব বীজ আকারে ছোট সেগুলোর ক্ষেত্রে উপর দিয়ে পানি দিলে বীজগুলো পানির ধাক্কায় একস্থানে অঙ্কুরোদগমে ব্যঘাত ঘটতে পারে। তাই সব টবের উপর দিয়ে পানি না দিয়ে তলা দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করা উচিত।
পরিচর্যা:
অনেক সময় শাক-সবজির চারা, বিভিন্ন প্রকার পাখি, পিঁপড়া, মাকড়সা ইত্যাদি নষ্ট করে ফেলতে পারে। তার জন্য হেপ্টোক্লোর ৪০ পরিমাণ মত দিয়ে যাবতীয় পিঁপড়া ও মাকড়সার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষা করা যায়। তবে পাখির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে হলে টবের উপর তারের বা নাইলনের জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় টবের মাটিতে বীজ বপনের আগে বিভিন্ন প্রকার আগাছা জন্মাতে পারে। আগাছাগুলো নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলে দিতে হবে। টবে চারা জন্মালে চারার গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, শাক-সবজি টবগুলোতে অবশ্যই আলো-বাতাস পায় এমন জায়গায় রাখা দরকার। তবে অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টি-রোদ-তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য সাময়িকভাবে টব নিরাপদ স্থানে সরানো যেতে পারে।
সবজি সংগ্রহ:
সবজি সময় মত সংগ্রহ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সবজি বেশিদিন গাছে না রেখে বেশি পোক্ত না করে নরম থাকতেই তুলে খাওয়া ভাল। এতে করে একদিকে যেমন নরম খাওয়া যায় অন্যদিক গাছে আরও বেশি সবজি আসে। সবজি গাছ থেকে ছিঁড়ে সংগ্রহ করা যাবে না। আস্তে করে কেটে সংগ্রহ করতে হবে। তাহলে সবজি গাছের কোন ক্ষতি হবে না।
টবে সবজি আবাদের সুবিধা:
টবে সবজি আবাদের বিশেষ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে। যেমন- প্রাকৃতিক দূযোর্গ, প্রচণ্ড গরম, অতিরিক্ত বৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ঝড়-ঝঞ্ঝা ইত্যাদির কবল থেকে টবের সবজিকে রক্ষা করা যায় স্থানান-র করে। পশু-পাখির উপদ্রব থেকে বাঁচানো যায় জাল দিয়ে ঘিরে রেখে। সংসারের অব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের পাত্র ও সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে খরচ কমিয়ে আনা যায়। প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীজ, সার, কীটনাশক ইত্যাদি অপব্যয় হয় না। নিজেরা তৈরি করে জৈব সার ব্যবহার করা যায় সবজিতে। ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এগুলো সাজিয়ে রাখা যায় ঘরের বিভিন্ন জায়গায়।
লেখক: বকুল হাসান খান
এগ্রোবাংলা ডটকম