চেতনাবার্তা ডেস্কঃ করোনা মহামারী এবং অনলাইনে বদলী নীতিমালার কারণে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বদলী কার্যক্রম। গত বছরের মার্চে বদলী কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ দেয় অধিদপ্তর এবং তা আজও বহাল আছে এ কারণে শত শত শিক্ষকের ভোগান্তি চরমে।
২০১১-২০১৮ পর্যন্ত জেলা সদরে,সিটিতে, পৌরসভায় বহিরাগতদের বদলি বন্ধ ছিলো। তারপর ২০১৯ এর শুরুতে ছিলো ১০%। যেখানে আগে থেকেই ১২%, ১৩% করে শিক্ষক উপস্থিত ছিলো। কিভাবে??
সেজন্য আমরা আর বদলি হতে পারলাম না।
উল্লেখ্য যে আমাদের পূর্বের মন্ত্রী মহোদয় ২০১৫ সালে তার বিশেষ ক্ষমতাবলে সারাদেশে শত শত শিক্ষককে সিটি,জেলা সদর ও পৌরসভায় বদলি করেছিলেন!
যা হোক, ২০১৯ এর মার্চে আবার নীতিমালা সংশোধন হলে বহিরাগত কোটা ১০% থেকে ২০% করা হয়। ফলে ২০২০ সালে আমরা বহু কাঙ্খিত বদলির সুযোগ ও শূন্য পদ পেয়েছি।
আজ নতুন ডিজি মহোদয় যোগদান করে যদি জানিয়ে দেন "সম্ভবত বদলিতে অনেকে অনেক টাকাও দিয়েছে।" বা অন্য কোনো কারণ দেখিয়ে পূর্বের অর্ডার হবেনা তাহলে কোন শিক্ষক পাগল হবেনা!
আমরা সকল নিয়ম নীতি মেনে বদলির চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছি।
সরকারি কোনো আমলার চেয়ার পরিবর্তনের জন্য নিয়ম নীতি বা সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারেনা। কেউ টাকা আদান প্রদান করে থাকলে তাদের খুঁজে বেড় করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন। কোনো শিক্ষক ১৬ হাজার টাকা বেতন পেয়ে লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। কেউ দিয়ে থাকলে বাধ্য হয়েছে দিতে। সব গিয়ে ঢুকেছে আমলাদের পকেটে। যে ডিপার্টমেন্টে ২০০ টাকা না দিলে অফিস সহকারী সার্ভিস বুক আপডেট করেনা, যেখানে ৩০০ থেকে ৭০০ করে৷ চাঁদা না দিলে চাকুরী স্থায়ীকরনের পেপারস্ জেলা অফিসে যায় না, যে অফিসে ৫০০ টাকা হাতে না ধরিয়ে দিলে ফরোয়ার্ডিং টাইপই হয়না, EFT কাজের জন্যও দিতে হয় টাকা, যে অফিসে চাহিদামতো টাকা দিতে রাজি না হলে বড় বাবু আমাদের স্মারক নাম্বার দেয় না তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। এই বেচারা গরীব শিক্ষকদের আর কত কষ্ট দিবেন!
যখন বিদ্যালয়ে বহু প্রতিক্ষার পর শিক্ষক সংখ্যা ৫হয়, আর এবার বদলি না হতে পারলে অন্য কলিগ চলে যাবে তার গন্তব্যে, আর আমি অনির্দিষ্টকালের জন্য থেকে যাবো বাবার বাড়ি ; এমন পরিস্থিতিতে কোন মহিলা শিক্ষক পাগল হবেনা?!
যখন একাধিক বার মিসক্যারেজের শিকার, ডাক্তার বলছে স্বামী - স্ত্রী একত্রে অবস্থান করতে, সম্পূর্ণ বেড রেষ্টে যেতে তখন সে শিক্ষক পাগল না হয়ে কি হবে!
হয় চাকরি না হয় সংসার! আবার দেখা যাচ্ছে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজে চাকুরী ছাড়লেও আপনার সংসারে সমস্যা হবে। চাকুরির জন্যই হয়তো বিয়ে করেছিলো। এসকল পরিস্থিতিতে সবাই পাগল হবে।
মানবিক আবেদন নিয়ে ডিজি মহোদয়ের সাক্ষাৎ এর জন্য গেলে তার দরজার, "বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে ডিজি মহোদয় সাক্ষাৎ দিবেন না।" পোস্টের দেখে ফিরে আসতে হয়। তাহলে আমাদের অভিভাবক কে? আমরা সমস্যা নিয়ে কার দারস্থ হবো?
আমাদের ডিজি মহোদয় একজন প্রাথমিক শিক্ষকের সন্তান। আমরা তার নিকট শিক্ষকদের যথাযোগ্য মর্যাদা ও অধিকার আশা করি।
এব্যাপারে মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের হস্তক্ষেপ আশা করি।
[চেতনাবার্তা অনলাইন ডেস্ক]