চেতনা বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,
আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেনের মতো ভিডিওবার্তা প্রকাশ করে
বিএনপির নেতারা আন্দোলন চালাচ্ছেন। অবরোধে সাধারণ মানুষ হতাহতের জন্য
বিএনপি চেয়ারপারসনকে দায়ী করে তিনি বলেন, আর কত লাশ লাগবে খালেদা জিয়ার? আর
কত লাশ ফেললে তার শান্তি হবে? তিনি আরও বলেন, রাজনীতি ও রাজনৈতিক
নেতৃত্বের প্রতি জনগণকে বীতশ্রদ্ধ করতে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতের উসকানি দেওয়া
হচ্ছে। তিনি সহিংস আন্দোলন থেকে সরে আসার জন্য বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি
আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে গতকাল বিকালে
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি বৈঠকে দলীয় সভানেত্রী
হিসেবে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। বৈঠকে তিনি সভাপতিত্ব
করেন। শেখ হাসিনা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি ও একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে
অভিযুক্ত জামায়াত এক হয়ে দেশের জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মানুষ
হত্যা করছে। মানুষের রক্ত নিয়ে হোলি খেলা বন্ধ করার জন্য বিরোধীদলীয়
নেত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এভাবে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন,
দেশবাসী আর সহ্য করবে না। বিএনপি প্রধানকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর
হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে যেসব খুন হচ্ছে, একদিন এসব
হত্যাকাণ্ডের জন্য খালেদা জিয়ার বিচার হবে, তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়
করানো হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে নির্মমভাবে মানুষ হত্যা করে
রাজনীতিবিদদেরই হেয় করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন,
রাজনীতির প্রতি মানুষের আস্থা কমাতে তারা এসব ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি জনগণকে বীতশ্রদ্ধ করতেই এসব করা হচ্ছে। দেশবাসীর
প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সহিংসতা করছে এদের হাতেনাতে
ধরিয়ে দিন। সাংবাদিকদের বলব, কোনটা পুড়ছে সেটা না দেখে কে পোড়াচ্ছে, কে
রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে মানুষের জীবন কেড়ে নিচ্ছে তাদের ছবি প্রকাশ করুন।
শেখ
হাসিনার সূচনা বক্তব্যের পর রুদ্ধদ্বার বৈঠক শুরু হয়। সাংগঠনিক এবং
সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ
আশরাফুল ইসলাম। বৈঠকে দীর্ঘ আলোচনায় দেশের সর্বশেষ রাজনীতি,
বিএনপি-জামায়াতের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, আগামী নির্বাচন এবং জাপা
চেয়ারম্যান এরশাদের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা নিয়েও নেতারা বক্তব্য রাখেন।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক এবং উপ-দফতর সম্পাদক পদে
পরিবর্তন আনা হয়েছে। দলটির দফতর সম্পাদক সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী
আবদুল মান্নান খানের স্থলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী আবদুস সোবহান
গোলাপ, উপ দফতর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের স্থলে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য
আমিনুল ইসলাম আমিনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। বৈঠকে
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর মহান স্বাধীনতা দিবসের
বিস্তারিত কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়।