আজ শুক্রবার সন্ধ্যায়
শিক্ষার্থীদের করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও সরকারি
শিশু পরিবার বালিকা শাখার উপতত্ত্বাবধায়ক রিক্তা বানু। এ ঘটনায়
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিনটির সংশ্লিষ্ট শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত
হয়েছে।
সরকারি শিশু পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বালিকা শাখায় ৬৫ জন সদস্য
রয়েছে। তারা শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে। ১৬ সেপ্টেম্বর
শিশু পরিবারের এক সদস্যর করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। সে শহরের হাজীপাড়া আদর্শ
উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ে। এরপর আরও কয়েকজনের মধ্যে উপসর্গ ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তাদের
বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০ সেপ্টেম্বর শিশু পরিবারের ২৫ জনের
নমুনা সংগ্রহ করা হয়। করোনা পরীক্ষার ফলাফলে ১৩ জনের পজিটিভ আসে।
শিশু
পরিবার বালিকা শাখার উপতত্ত্বাবধায়ক রিক্তা বানু জানান, ওই ১৩ জনের মধ্যে ৫
জন করে সদর উপজেলার বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও হাজীপাড়া
আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অন্য তিনজন স্থানীয় সোনালী শৈশব নামের
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী। তাদের কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা
দেওয়া হচ্ছে। আজ শুক্রবার শিশু পরিবারের আরও ২১ জনের করোনা পরীক্ষা করা
হয়েছে। তবে এখনো ফলাফল জানা যায়নি। পর্যায়ক্রমে শিশু পরিবারের সব সদস্যের
করোনা পরীক্ষা করা হবে।
বাহাদুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান
শিক্ষক ফারহানা পারভীন বলেন, তাঁর বিদ্যালয়ে ৪২৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর
মধ্যে চতুর্থ শ্রেণিতে রয়েছে ৮৪ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৭৬ জন। ১২ সেপ্টেম্বর
থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরুর পর ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ওই পাঁচ
শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিল। তখন তাদের মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ দেখা
যায়নি।
ফারহানা পারভীন আরও বলেন, এর পর থেকে তাদের অনুপস্থিত দেখে
শিশু পরিবারে যোগাযোগ করে জানা যায়, সেখানকার মাধ্যমিক পর্যায়ের কয়েকজন
সদস্য সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। পরে জানতে পারেন, ওই পাঁচ শিক্ষার্থী করোনায়
আক্রান্ত। তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। তাঁদের
মৌখিক নির্দেশে আপাতত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাঠদানের কার্যক্রম নিয়মিত চলছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, গতকাল
বৃহস্পতিবার জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এরপর
সংশ্লিষ্ট শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন থেকে কোনো
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির
পাঠদান বন্ধ থাকবে।
সিভিল সার্জন মাহফুজার রহমান সরকার বলেন, বিষয়টি
তাঁদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছে। আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিনে রেখে চিকিৎসা
দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে শিশু পরিবারের সবার করোনা পরীক্ষা করা হবে। কোনো
শিক্ষার্থীর মধ্যে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে তাকে স্কুলে না পাঠানোর জন্য
তিনি অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।