শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে শ্রেণিকক্ষের টিনের চালা। সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে সয়লাব হয় শ্রেণিকক্ষ। তাই ক্লাস না করেই বৃষ্টির দিনে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিতে হয়। এছাড়া শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকট থাকায় বিজ্ঞান শাখার ছাত্রীদের পাঠদান চলে বারান্দায়। একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনায় এমন নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার শাহ্নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে।
রোববার সকাল থেকেই শাজাহানপুরে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। দুপুর দেড়টার দিকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে শাহ্নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ টিনসেড ভবনে থাকা ৬ষ্ঠ শ্রেণির ক্লাস রুমটি পানিতে সয়লাব হয়। বই-পুস্তকসহ শিক্ষার্থীরা ভিজে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ক্লাস না নিয়েই ৬ষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ছুটি দিতে বাধ্য হন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এসময় পাশের কক্ষে থাকা ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বই-পুস্তকও আংশিক ভিজে যায়। তবুও কষ্ট করে ওই কক্ষেই চলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। শ্রেণিকক্ষ বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হওয়ার সংবাদ পেয়ে কয়েকজন মেম্বারকে সাথে নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি সরেজমিন পরিদর্শন করেন চোপীনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান বাবলু।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া মনি ও জেইমা আক্তার জানায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই তাদের ক্লাস রুমে পানি পড়া শুরু হয়। তখন বেঞ্চগুলো এদিক সেদিন সরিয়ে নিয়ে আধা ভেজা অবস্থায় ক্লাস করতে হয়। ৯ম শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা জানায়, শ্রেণিকক্ষের সংকট থাকায় তাদেরকে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বারান্দায় ক্লাস করতে হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) ফজলুল বারী জানিয়েছেন, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে ১৯৯৬ সালে শাহ্নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন স্থানীয়ভাবে নির্মিত একটি টিনসেড ভবনে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়। পরে ২০০৪ সালে তৎকালীন ফ্যাসিলিটিজ ডিপার্টমেণ্ট কর্তৃক সরকারি অর্থায়নে ৪ কক্ষ বিশিষ্ট একটি দ্বিতল ভবন নির্মিত হয়।
যার একটি কক্ষে বিদ্যালয়ের অফিস এবং অপর তিনটি কক্ষে চলে পাঠদান। অপরদিকে প্রায় ২৭ বছর আগে নির্মিত টিনসেড ভবনটির চালা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। অর্থের অভাবে মেরামত করতে না পারায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে সয়লাব হয় শ্রেণিকক্ষ। তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৫টি ক্লাসের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে।
এছাড়া ৯ম-১০ম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও মানবিক শাখা চালু থাকায় পাঠদানের ক্ষেত্রে অন্তত: ৭টি শ্রেণিকক্ষ প্রয়োজন। কিন্তু ব্যবহার উপযোগী শ্রেণিকক্ষ আছে মাত্র ৪টি। ফলে বিজ্ঞান শাখার ছাত্রীদের ক্লাস নিতে হচ্ছে বারান্দায়। এমতাবস্থায় টিনসেড ভবনের চালা মেরামতসহ নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য তিনি সরকারের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
চোপীনগর ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান বাবলু জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষ বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হওয়ার সংবাদ পেয়ে তিনি রোববার দুপুরে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন। শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগের বিষয়টি উপজেলা এবং জেলা প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে তিনি সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন।