GuidePedia
আপনার প্রতিষ্ঠানের বহুল প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে এখানে ক্লিক করুন অথবা মেইল করুন: chetonabarta@gmail.com

মোঃ রাশেদুজ্জামান : বর্তমানে অনলাইনে কম বেশি সবাই ঢুঁ মারেন। যুবকদের একটি বিশাল অংশ দিনের বেশিরভাগ সময়ই ব্যায় করেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। শুধু যুবকরাই নয় প্রায় সব বয়সী মানুষেরই এখন নিত্য সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এর বিভিন্ন ওয়েবসাইট। এর মধ্যে জনপ্রিয় মাধ্যম হলো ফেসবুক, টুইটার, ইন্সট্রাগাম ইত্যাদি।

এসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইউজাররা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ট্যাটাস আপলোড করেন। আবার কেউ কেউ ভালো লাগা কোন পোস্ট বিচার বিবেচনা না করেই সাথে সাথে শেয়ার করে থাকেন। নিজের ওয়ালে ব্যাক্তিগত পোস্ট করা থেকেও কেউ কেউ বিরত থাকেন না। আবার অনেকে ব্লগিং করে অনলাইনে ইনকামও করেন। এতকিছুর ভীড়ে সবাই স্যোসিয়াল সাইট ইউজার। 

আর এইসব ইউজাররা ইদানিং একটা শব্দের সাথে অনেক বেশি পরিচিত হয়ে ওঠেছে। সেটা হলো ‘ট্রল’। প্রতিটা দিন কেউ কেউ না কেউ ট্রলের শিকার হচ্ছেন। এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও ট্রলের শিকার হয়ে থাকেন। সেই ‘ট্রল’ হওয়া মানে কী? একটু জেনে নেওয়া যাক ‘ট্রল হওয়া মানে কী? ‘ট্রল’ ইংরেজী শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হলো খেয়াল খুশি মতো কিছু বলা। আর পারিভাষিক অর্থ হলো এক ধরনের অপমানিত হওয়া, হাস্য পাত্র হওয়া বা খিল্লির পাত্র হওয়া বা ঘৃণার শিকার হওয়া বা মজার ছলে কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করা। অর্থাৎ অনলাইনে তথা, ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদিতে কারো বক্তব্য বা ছবি বা ভিডিও নিয়ে তাকে অপমান করা, তুচ্ছ করা। 

এখন এই ‘ট্রলের’ শিকার যারা হোন তাদের সামাজিক অবস্থা কেমন হয়? তাদের কেউ লজ্জায়, অপমানে আত্মহত্যা করেন আবার কেউ কেউ নিজের কর্মস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হোন, আবার কেউ সমাজচ্যুত হোন। বর্তমানে একটি বিষয় খুব লক্ষ্যণীয় যে যারা ট্রলের শিকার হোন তাদের অধিকাংশই রাজনীতিবীদ। ট্রলের শিকার হয়ে মন্ত্রীত্ব পর্যন্ত চলে যাওয়ার নজীর এই দেশে আছে। জাতীয় সংসদে দেওয়া বক্তব্য নিয়েও এমপি, মন্ত্রী এমনকি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়েও ট্রলের নজীর আছে এই দেশে। 

সম্প্রতি একজন উপমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া একটি বক্তব্যে ভুল করে জান্নাতের স্থলে জাহান্নাম শব্দটি ব্যবহার করে বলেন “আল্লাহ যেন বঙ্গবন্ধুকে জাহান্নামের সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গায় স্থান দেন।”  তিনি পরক্ষণেই ভুল বুঝতে পেরে শুদ্ধ করে নিয়ে নতুন করে বক্তব্য দেন। অথচ পুরো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে সেই ভুল শব্দ নিয়ে বলা বাক্যাটির ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে মুহুর্তের মধ্যেই। কিন্তু একটি ফুটেজেও তার পরের বক্তব্যটি স্থান পায়নি। আসল উদ্দেশ্য হলো উনাকে নিয়ে ট্রল করা, তাকে হেয় করা, তার সম্মান ক্ষুন্ন করা। 

এটা আসলে কেন? যদি এটাকে মুক্তচিন্তার বহিঃপ্রকাশ বলি তাহলে তো বলতে হয় কাউকে হেয় করে কারো সম্মান ক্ষুন্ন করে কী কখনো মুক্তচিন্তার বহিঃপ্রকাশ হয়? এক কথায ‘না’ হয়না। তাহলে এটাকে কী বলা যেতে পারে? অবশ্যই সেটাকে মানসিক সমস্যা বলা যেতে পারে। এটা করে এক ধরনের পৈশাচিক আনন্দ পায় ট্রলকারীরা। আর ব্লগাররা এটা করে ভিউ বাড়ানোর ধান্দায়। আসলে এটা আর যাই হোকনা কেন এক কথায় যেটা বলা যায়, সেটা হলো মানসিক অবক্ষয়। আমরা দিনে দিনে মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে পড়ছি এ থেকে উত্তোরণের কোন পথই মনে হয় আমাদের জানা নেই। আমরা কবে মানুষ হবো?


Comments
0 Comments

Post a Comment

মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
-সম্পাদক, চেতনাবার্তা।

 
Top