নানা কারণে আমাদের মন খারাপ হতে পারে, আসতে পারে হতাশা। তবে এই মন খারাপ ভাবটা খুব বেশি সময় স্থায়ী নাও হতে পারে।
কিন্তু এই মন খারাপ থেকে মন ভালো হওয়ার মাঝের সময়টায় আমরা অনেকেই যা করি তা হচ্ছে, ফেসবুকে কষ্টের কারণ-মন যে খারাপ এটা শেয়ার করি।
অনেকে তো খুব কাছের কারও কারণেই যে মন খারাপ, তার কথাও বলে দেই। এতে করে লাভ কী হলো? হয়তো কিছু সময়ের জন্য মনে হতে পারে, যাক-একটা ভালো শিক্ষা দেওয়া হয়েছে তাকে।
হুম মানছি-শিক্ষা হয়তো তার হয়েছে...কিন্তু এই যে নিজের সমস্যাগুলো স্যোশাল মিডিয়ায় দিয়ে কেমন শিক্ষিতের পরিচয় আমরা দিলাম? এতে করে লাভ তো কিছু হয়ই না, বরং ক্ষতি যা হয়:
হতাশা বাড়ে
নিজের মন খারাপ নিয়ে যখন আমরা ফেসবুকে অন্যের ওয়ালে কোনো বন্ধুর খুব আনন্দের ছবি দেখি, মনের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস চলে আসে। আমরা হিসেব মেলাতে শুরু করি, আর নিজেদের হতাশা আরও একটু বাড়িয়ে নেই।
ভালো নেই
ফেসবুকের বন্ধুরা সবাই আমাদের ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত না। এখানে কত ধরনের বন্ধু আছে, রয়েছে কলিগরাও। সবাই জেনে যাচ্ছে আজ বিশেষ কারও সঙ্গে আপনার ঝামেলা হয়েছে, আপনি ভালো নেই। সেই অবস্থায় সারাদিন অফিস করা বিব্রতকর হবে না?
সময় বেশি
যে কারণে মন খারাপ হয়ে আছে, অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলে হয়তো তা খুব অল্প সময়েই মন ভালো করে দিতে পারে। কিন্তু যেহেতু ফেসবুকে বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করা হয়েছে, একটু পরপর কেউ সমবেদনা জানাচ্ছে, কেউ হয়তো ঘটনার পেছনের ঘটনা জানতে অনুসন্ধান চালাচ্ছে...তার মানে হচ্ছে বিষয়টি মাথা থেকে যাচ্ছেই না, বরং পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।
সম্পর্ক
যার সম্পর্কে অভিযোগ করে স্ট্যাটাস দেওয়া হলো, ইচ্ছে করলেই কি সম্পর্কটা আবার ঠিক হয়ে যাবে? তিনিও সামাজিকভাবে হেয় হলেন, স্বাভাবিকভাবেই তার মন খারাপ হবে। এটা দেখার আগে হয়তো তিনিই এসে সরি বলতেন। আর এখন?
ডেনমার্কের এক গবেষণা সংস্থার সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, অনেক ক্ষেত্রে বিষণ্ণতার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে 'ফেসবুক'। এই সংস্থা ১ হাজার ৯৫ জনের ওপর গবেষণাটি চালায়। তার মধ্যে বেশ কয়েক জনেকে ফেসবুক ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। তারপরই দেখা যায়, ফেসবুক ব্যবহার না করা ৮৮ শতাংশ মানুষ ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তুলনায় বেশ ভালো ছিলেন।
ফেসবুকে ভালো লাগা গুলোই শেয়ার করুন, মন খারাপে পাশের বন্ধুর মাঝে আশ্রয় খুঁজুন, ভার্চ্যুয়াল জগতে নয়।