GuidePedia
আপনার প্রতিষ্ঠানের বহুল প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে এখানে ক্লিক করুন অথবা মেইল করুন: chetonabarta@gmail.com

 
চেতনা বার্তা ডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়া তার ভাষায় ভোট কারচুপি ও ক্ষমতা কুক্ষিগত করার কোন সুযোগ না থাকার কারণে পরবর্তী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকার জেদ ধরেছেন। আজ বিকালে এখানে অনুষ্ঠিত এক বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া জেদ ধরেছেন যে, তিনি আসন্ন নির্বাচনে কোনভাবেই অংশ গ্রহণ করবেন না। কারণ, এতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার এবং ভোট কারচুপির কোন সুযোগ নেই।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট কারচুপির রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। তিনি আরো বলেন, ভোটের মালিক হচ্ছে জনগণ। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি এবং নিশ্চিত করেছি যে, জনপ্রতিনিধিরা ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনী এনেছিল যাতে কেউ সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে না পারে। তিনি বলেন,‘আমরা সামরিক আইনের অধ্যাদেশগুলোর সংশোধনী এনেছি যেগুলো হাইকোর্ট বাতিল করেছিল।’কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষ্যে কোটালিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ তালিমপুর তালিহাটি হাই স্কুল মাঠে এ জনসভার আয়োজন করে। আওয়ামী উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ ও কাজী আকরাম উদ্দিন আহেমেদ, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ অন্যান্যের মধ্যে সভায় বক্তৃতা করেন। কোটালিপাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম হুমায়ুন কবির সভায় সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে বিগত পাঁচ বছরে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ পরিবেশে ৬ হাজারের বেশী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি বলেন,‘এসব নির্বাচনের মাধ্যমে ৬৪ হাজার ২৩ জন জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন এবং নির্বাচনের ব্যাপারে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’ শেখ হাসিনা বলেন, অধিকাংশ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, প্রধান বিরোধী দল কিভাবে বলে যে, এসব নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাই, আমি বিরোধী দলীয় নেতার কাছে জানতে চাই, তার প্রার্থীরা ভোট কারচুপির মাধ্যমে এসব নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছে কি না। আপনাকে এই প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’ আলোচনা ও ডিনারে যোগ দেয়ার জন্য বিরোধী নেত্রীকে পুনরায় গণভবনে আমন্ত্রণ জানানোর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তাকে হরতাল প্রত্যাহার করার এবং আগুন দিয়ে মানুষ না মারার আহ্বান জানিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাকে বলেছিলাম আপনার যা বলার আছে আলোচনার টেবিলে বসে বলেন। কোমলমতি শিক্ষাথীদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করবেন না। তাদেরকে পরীক্ষা দিতে দেন। অথচ তিনি আমার অনুরোধ রাখলেন না। তিনি একের পর এক হরতাল দিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন মুসলমান কি করে আর একজন মুসলমানকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করতে পারে। বিএনপি-জামায়াত ক্যাডাররা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করছে। তারা ঘুমন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। তারা শিশুদেরকে হত্যা করছে। এটি কোন ধরনের অমানবিকতা। তাদের কি কোন দয়া-মায়া নেই। যাদের দয়া-মায়া আছে, তারা কখনো এ ধরনের অপরাধ করতে পারে না।
শেখ হাসিনা দেরিতে ফোন রিসিভ করায় বিরোধী নেত্রীর কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২৬ অক্টোবর তিনি কয়েকবার বিরোধী নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেন। তিনি আমার ব্যক্তিগত স্টাফকে জানান, রাত ৯টার আগে তিনি কোন ফোন রিসিভ করতে পারবেন না। তিনি প্রস্তুত নন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফোন ধরার জন্য প্রস্তুতির কথা বলে তিনি কি বোঝাতে চেয়েছেন। আমি তো ফোনে তাকে দেখতাম না। তা হলে কেন রাত ৯টা পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রয়োজন হলো।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত সরকারের সন্ত্রাস ও দুর্নীতির কঠোর সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ ৪ দলীয় জোটের পাঁচ বছরের মেয়াদকালে সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের একটি স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া তার কালো টাকা জরিমানা দিয়ে সাদা করেছিলেন। তার দুই ছেলে বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছে। আমরা তাদের পাচারকৃত বিপুল পরিমাণ টাকা দেশে ফিরিয়ে এনেছি। বাকী টাকাও আমরা ফিরিয়ে আনব।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সময়ে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও খাদ্য নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করে একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সামাজিক ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, জনগণ যাতে পেট পুরে খেতে পারে, উন্নত জীবন-যাপন করতে পারে এ জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগকে আবারো নির্বাচিত করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে তার সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। সাধারণ জনগণের মুখে হাসি ফুটানোর লক্ষ্যে সকলের দোয়া কামনা করে তিনি বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর মতো রক্ত দেব।
শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন এবং এই বিচারের রায় কার্যকর করতে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার ও বিডিআর বিদ্রোহের বিচার যে ভাবে সম্পন্ন হয়েছে, ঠিক তেমনি করে মানবতা বিরোধী অপরাধীদের বিচারও সম্পন্ন হবে।
প্রধানমন্ত্রী সমাবেশ স্থল থেকে বাংলাদেশ পারমাণবিক কৃষি ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা স্কুল ও কলেজের একাডেমিক ভবন, কৃষি আবহাওয়া ল্যাবরেটরী, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, মহিলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, শেখ মনি স্টেডিয়াম হোস্টেল ভবন, শেখ লুৎফর রহমান একাডেমিক ভবন, আদর্শ সরকারি কলেজ, পিনজুরি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, কোটালিপাড়া সাব-রেজিস্টার অফিসের নতুন ভবন, অগ্রণী ব্যাংক ভাঙ্গারচর শাখা ও গোপালগঞ্জ কোটালিপাড়া-পায়রাহাট সড়ক উদ্বোধন করেন।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ রাসেল কলেজ, রামশীল কলেজ, শেখ হাসিনা আদর্শ কলেজ, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন, আমতলি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স এবং বান্দরাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
Comments
0 Comments

Post a Comment

মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
-সম্পাদক, চেতনাবার্তা।

 
Top