GuidePedia
আপনার প্রতিষ্ঠানের বহুল প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে এখানে ক্লিক করুন অথবা মেইল করুন: chetonabarta@gmail.com

চেতনা বার্তা, অসীম দাশ, কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি ঃ
বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গপসাগরের কূল ঘেষে ককসবাজার জেলার অপূর্ব সোন্দর্য্য বেষ্টিত পর্যটন, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের একটি বিছিন্ন সোনাদিয়া দ্বীপ। সোনাদিয়া দ্বীপের আয়তন ৪৯২৮ হেক্টর। এ দ্বীপটি পূর্ব পশ্চিমে-লম্বা। সৃষ্টি শৈল্পিক আদলে গড়া কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্পের আরেক সম্ভাবনাময় সৈকতের নাম সোনাদিয়া। এখানে রয়েছে বালিয়াড়ি, কাছিম প্রজনন ব্যবস্থা, চামচ ঠোটের বাটন পাখি এবং অতিথি পাখির অভয়ারণ্য। ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির পরিমান ০৩.১৫ একর। শুটকী মহাল রয়েছে ২টি, চিংড়ী চাষ যোগ্য জমির পরিমান ৯৮.০০ একর। বন বিভাগের জমির পরিমান ২১০০ একর। বাকী সব প্রাকৃতিক বনায়ন ও বালুময় চরাঞ্চল। দূষণ ও কোলাহল মুক্ত সৈকত, লাল কাকড়ার মিলন মেলা, বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কাছিম, পূর্ব পাড়ার হযরত মারহা আউলিয়ার মাজার ও তার আদি ইতিহাস, জেলেদের সাগরের মাছ ধরার দৃশ্য, সূর্যঅস্থের দৃশ্য, প্যারাবন বেষ্টিত আকাঁ-বাঁকা নদী পথে নৌকা ভ্রমন। যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকা সত্বেও এ দ্বীপে সরকারী বা বেসরকারী ভাবে যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে এ পযন্ত পর্যটন আর্কষনের আধুনিক কোন পদক্ষেপ বলতে গেলে নেওয়া হয়নি। সঠিক পরিকল্পনা পূর্বক তা বাস্থবায়ন করা গেলে পর্যটন রাজধানী হিসাবে পরিচিত কক্সবাজার শহরের অতীব নিকটবর্তী এ দ্বীপটি পর্যটন বিকাশে অন্যতম স্থান হতে পারে যা দেশের তথা কক্সবাজারের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভুমিকা রাখবে। পাশাপাশি দ্বীপবাসীর জন্য বিকল্প আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এই দ্বীপে দ্বীপবাসীর সম্পৃক্ততায় কমিউনিটি ভিত্তিক ইকোট্যুারিজমের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। যা দ্বীপবাসীর বিকল্প আয়ের ব্যবস্থা সহ অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়ন উলে¬¬খযোগ্য ভূমিকা রাখবে। সোনাদিয়ার দ্বীপের নামকরণের সঠিক কোন ঐতিহাসিক তথ্য থাকলেও সোনাদিয়ার দ্বীপকে ঘিরে আদিকাল হতে সোনা সমতুল্য দামী পন্য মৎস্য সম্পদ আহরিত হত বলে এই দ্বীপ সোনার দ্বীপ, সোনাদিয়া বলে পরিচিতি। তাই ঐতিহাসিক ভাবে না হলেও লোক মুখে উচ্চারিত সোনাদিয়ার কথা বির্বতনে সোনাদিয়ার রুপান্তরীত হয়। দ্বীপটি সোনাদিয়া হিসাবে বর্তমানে প্রজন্মের কাছেও বই পুস্তুুকে স্থান পাচ্ছে। কালক্রমে মানুষ মহেশখালীর অপরাপর এলাকা সমূহে বসবাস শুরু করলেও আদিকাল পরিচিতি সূচনা হয় সোনাদিয়া ঘিরে। কারণ প্রাচিন কালের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র প্রাচীন মাধ্যমে ছিল নদী পথ, তদুপরি মানুষের জীবন জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম ও ছিল মৎস্য শিকার। তাই উভয় কারণে সোনাদিয়ার সাথে মানুষের পরিচয় ঘটে অনেক পূর্ব থেকে। মহেশখালীতে মূলত ১৫৫৯ সালের ভয়বহ জলোচ্ছাসের পর হতে বসতি আরম্ভ হয় তদপুর্বে মহেশখালী কক্সবাজারের সাথে যুক্ত ছিল বলে ইতিহাসে প্রমান্য। কালক্রমে মহেশখালী চট্টগ্রাম এলাকা থেকে লোকজন এসে বসতি শুরু করে । তৎমধ্যে বিশেষ ভাবে যারা মাছ শিকার পেশার সাথে পূর্ব হতে জড়িত ছিল এবং সোনাদিয়া সম্মন্ধে অবগত ছিল তারাই সোনাদিয়াতে স্থায়ী ভাবে বসবাস করার অধিক উপযুক্ত মনে করত। সোনাদিয়ার প্রাচীন পরিবার হচ্ছে‘‘ ফৌজনীর পরিবার। ব্যক্তি বিশেষে ছাদের আলী, আশরাফ মিয়া ও আছাদ আলী এদের পরিবার সোনাদিয়ার ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্যবাহী পরিবার বলা চলে।
স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই দ্বীপে অনেক দিন অবস্থান করেছিলেন। পরবর্তীতে ঐ পরিবার শেখ মুজিবের পক্ষ পতে প্রাপ্ত অবদানের কথা শোনা যায়। বর্তমানে ৮১০ জন নারী-পুরুষের বসবাস সোনাদিয়ায়, তৎমধ্য ২০০১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ৩৮৪ জন। বিশেষ করে শীত মৌসুমে শুকানো বিভিন্ন প্রজাতির সুটকী মাছ ভোজন খুবই সু-স্বাদু। তাই কক্সবাজারে পর্যটনে আসা কোন পর্যটকই সোনাদিয়ার শুটকী ছাড়া ঘরে ফিরতে চায় না। সোনাদিয়ার শিক্ষা ব্যবস্থা তেমন উন্নত নয়।এখানে রয়েছে ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মসজিদ রয়েছে ২টি। সাদা বাইন, কালো বাইন, কেওড়া, হরগোজা, নোনিয়া সহ প্রায় ত্রিশ প্রজাতির প্যারা সমৃদ্ধ উদ্ভিদ বিদ্যমান। মোহনা, চর ও বন ভূমিতে ঊনিশ প্রজাতির চিংড়ি, চৌদ্দ প্রজাতির শামুক ,ঝিনুক নানা ধরনের কাকড়া (যেমন ,রাজ কাকড়া ,হাব্বা কাকড়া, জাহাজি কাকড়া ,সাতারো কাকড়াসহ প্রায় আশি প্রজাতির সাদা মাছ, পঁয়ষট্টি প্রজাতির (বিপন্ন প্রায়) স্থানীয় ও যাযাবর পাখি এবং কমপক্ষে তিন প্রজাতির ডলফিন বিচরণ করে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ মাছের মধ্যে কোরাল, বোল, বাটা, তাইল¬া, দাতিনা, কাউন (কনর মাছ) ও প্যারাবন সমৃদ্ধ এলাকার অন্যান্য মাছ পাওয়া যায়। সরকারী ভাবে পর্যটনের ব্যবস্থা করলে দ্বীপের অবহেলীত মানুষের কর্ম সংস্থান হবে এবং সরকারী খাতে প্রচুর রাজস্ব আয় হবে।
Comments
0 Comments

Post a Comment

মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
-সম্পাদক, চেতনাবার্তা।

 
Top