চেতনা বার্তা ডেস্কঃ যুদ্ধাপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি
কার্যকর হচ্ছে আজ রাতেই। মঙ্গলবার রাত ১২ টার পর তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে
বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু।
এরই মধ্যে
জেল সুপার ফরমান আলী স্বাক্ষরিত 'লাল চিঠি' কাদের মোল্লার পরিবারের কাছে
পৌঁছেছে। তারা রাত ৮ টায় কাদের মোল্লার সাথে শেষ সাক্ষাতে ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে গেছেন।
রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে মিনিস্টার্স
অ্যাপার্টমেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন,
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নেতা কাদের
মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করার ক্ষেত্রে রিভিউ আবেদন (রায় পুনর্বিবেচনার)
ও জেলকোড বিবেচিত হবে না। দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে তাঁর
(কাদের মোল্লা) কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা
চাইবেন কি না? তিনি বলেছেন, চাইবেন না। এর ফলে তাঁর ফাঁসির রায় কার্যকর
করতে আর কোনো বাধা নেই।
কামরুল ইসলাম বলেন, কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করে তাঁর আইনজীবীরা মন্তব্য করেছেন যে কাদের মোল্লার রায় কার্যকর করতে পারবে না। তাঁদের এ মন্তব্য সঠিক নয়।
একই সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, ‘সকল আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় আজ রাতেই কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।’
কামরুল ইসলাম বলেন, কাদের মোল্লার সঙ্গে দেখা করে তাঁর আইনজীবীরা মন্তব্য করেছেন যে কাদের মোল্লার রায় কার্যকর করতে পারবে না। তাঁদের এ মন্তব্য সঠিক নয়।
একই সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, ‘সকল আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় আজ রাতেই কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে।’
ফাঁসি
কার্যকর করতে ছয়জন জল্লাদের নামও চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয়
কারাগারে বন্দী শাহজাহান ভূইয়া হচ্ছেন এই ছয়জনের মধ্যে প্রধান। তার সহকারী
পাঁচজনও ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।
শাহজাহান দুটি খুনের মামলায়
৬০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। তার গ্রামের বাড়ি নরসিংদী। ২০১০ সালের ২৭
জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার পাঁচ কয়েদি বজলুল
হুদা, মুহিউদ্দিন আহমেদ (আর্টিলারি) সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহারিয়ার
রশীদ খান ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (ল্যান্সার) ফাঁসির রায় কার্যকরে প্রধান
জল্লাদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এই শাহজাহান।
এ ছাড়া আলোচিত
শারমিন রিমা হত্যা মামলার আসামি মনিরকে ফাঁসি দেওয়া জল্লাদ হিসেবে তিনি
দায়িত্ব পালন করেন। কুখ্যাত খুনি খুলনার এরশাদ সিকদারের ফাঁসি কার্যকর করতে
শাহজাহানকে ওই সময় কাশিমপুর কারাগার থেকে খুলনায় নেওয়া হয়েছিল। ২০০৭ সালের
মার্চে কাশিমপুর কারাগারে জঙ্গী মামুনের ফাঁসির সময় জল্লাদের দায়িত্ব পালন
করেন এই শাহজাহান।
ওই সময় সহ জল্লাদের দায়িত্বে থাকা কালু মিয়াও
জল্লাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি
কালু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার কয়েদিদের
ফাঁসির রায় কার্যকরের সময়ও তিনি সহ জল্লাদের দায়িত্ব পালন করেন। কালু
সাভারের জোড়া খুনের মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি। তার বাসা রাজধানীর
মোহাম্মদপুরে। তিনি এখন পর্যন্ত ১৩টি ফাঁসির রায় কার্যকর করেছেন।
কারাগার
সূত্রে জানা যায়, কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার সময় চারজন
জল্লাদকে শাহজাহানের সহযোগী হিসেবে মঞ্চের পাশে ডাকা হবে।
ফাঁসির
মঞ্চের পাশে অনেকের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকবেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের
তত্ত্বাবধায়ক। তার হাতে থাকবে একটি লাল রুমাল। হাত থেকে রুমালটি মাটিতে পড়ে
যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জল্লাদ মঞ্চের লিভার (লোহার তৈরি বিশেষ হাতল) টেনে
দেবেন, এতে পায়ের তলা থেকে কাঠ সরে ফাঁসি কার্যকর হবে। এরপর লাশটি আধা
ঘণ্টা ধরে গলায় রশি দেওয়া অবস্থায় কুয়ার ওপর ঝুলতে থাকবে।