চেতনাবার্তা ডেস্কঃ বাবার সাথে অপহরণ নাটক করে সিনেমার কাহিনীকে হার মানিয়েছে রাকিবুল হাসান রিয়াদ নামে এক যুবক। এই নাটকের ‘পরিচালক ও প্রযোজক’ সে নিজেই। বান্ধবীকে এক লাখ টাকার আইফোন কিনে দেয়ার জন্য বাবার সাথে সে এই অপহরণ নাটক সাজিয়েছিল। কিন্তু বিধি বাম। বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণের একলাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার আগেই তার চতুররতা ধরা পড়ে। অবশেষে র্যাব -১২ বগুড়ার সদস্যরা এক বন্ধুসহ তাকে উদ্ধার করলে নাটকের অবসান ঘটে।
উদ্ধার হওয়া রাকিবুল হাসান রিয়াদ (১৯) সোনাতলা নামাজখালী গ্রামের ওবায়দুল সরকারের ছেলে। এ ছাড়া তার বন্ধু মুন্না হাসান (১৮)। মোঃ, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ী হাট এলাকার মইদুল আকন্দের ছেলে।
র্যাব সূত্র জানায়, রিয়াদ (১৯) বাবার কাছ থেকে একলাখ মুক্তিপণ আদায়ের কৌশল হিসাবে বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মগোপন করে। আত্মগোপন করে থাকা অবস্থায় সে তার মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখে। পরবর্তীতে রিয়াদ বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার
মা-বাবা
উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তারা বিভিন্ন আত্মীয় স্বজনের বাড়ি এবং সম্ভাব্য সকল
স্থানে তাকে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু রিয়াদের কোন সন্ধান না পেয়ে তার মা
সোনাতালা থানায় গত ২৫ জুলাই সাধারণ ডায়েরী করেন। এ অবস্থায় পরের দিন ২৬
জুলাই রিয়াদের মোবাইল ফোন হতে তার বাবা বগুড়া বিদুৎ বিভাগে কর্মরত মোঃ
ওবাইদুলের মোবাইলে ফোন আসে। এ সময় তাকে বলা হয় ‘তোর ছেলে রিয়াদকে জীবিত
উদ্ধার করতে হলে জরুরিভাবে এক লাখ টাকা রেডি করে জানা’। মোবাইল ফোনে এ কথা
জেনে তার মা-বাবা বুঝতে পারেন রিয়াদ অপহৃত হয়েছে।
এরপর তারা দ্রুত
বগুড়া র্যাব ক্যাম্পে এসে রিয়াদকে উদ্ধারের জন্য সহযোগিতা চান। রিয়াদকে
প্রচন্ড মারপিট করা করা হচ্ছে বলেও তারা র্যাবকে জানায়। অপহৃত রিয়াদের
কান্নাকাটিতে তার বাবা-মা ভেঙ্গে পড়ে এবং মুক্তিপনের টাকা দেওয়ার জন্য রাজি
হন।
এরপর র্যাবের একটি টিম রিয়াদকে উদ্ধারের জন্য অভিযানে নামে।
র্যাবের টিমটি বগুড়া ও জয়পুরহাটের বিভিন্ন স্থানে অভিযান করে অবশেষে ব
দুপচাঁচিয়া এলাকা হতে কথিত অপহৃত রাকিবুল হাসান রিয়াদ (১৯), তার বন্ধু
মুন্না হাসান (১৮) কে উদ্ধার করে
এরপর র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে রিয়াদ ও
মুন্না স্বীকার করে, রিয়াদ তার বাবার কাছ হতে এক লাখ টাকা মুক্তিপন নেওয়ার
উদ্দেশ্যে এই অপহরণ ও মারপিটের নাটক সাজিয়েছিল। মুক্তিপনের একলাখ টাকা
পেলে রিয়াদ তার এক বান্ধবীকে একটি আইফোন উপহার দিতো বলেও জানায়। তাই
পরিকল্পিত রিয়াদ ও তার বন্ধু মুন্নআএই নাটক সাজায় এবং মোবাইল বন্ধ করে
মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে।
পরে রিয়াদ ও তার বন্ধু
মুন্নাকে অভিভাবকদের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তারা ভবিষ্যতে এধরনের
কর্মকান্ডে নিজেদের আর জড়াবে না বলেও তারা র্যাবের কাছে মুচলেকা দেয়।