শেরপুরে মৃতকে জীবিত করার উদ্দেশ্যে কবর থেকে লাশ উত্তোলন

চেতনাবার্তা ডেস্ক : বগুড়ার শেরপুরে সাপে কেটে মারা যাওয়া ইসাহাক আলী (৬০) নামের এক বৃদ্ধের মৃতদেহ কবর থেকে তুলে জীবিত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালিয়েছে গ্রাম্য কবিরাজ।
সোমবার (২২ আগস্ট) বিকেলে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের বেলগাছি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইসাহাক আলী বেলগাছি গ্রামের মৃত জহর আলীর ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীরা জানান, ইসাহাক রোববার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় জমিতে পানি সেচ দিচ্ছিলেন। এসময় একটি বিষধর সাপ তার পায়ে কামড় দেয়। পরে পরিবারের লোকজন তাকে ধনুট উপজেলার জালশুকা এলাকার গ্রাম্য কবিরাজ ও সাপুড়ে ফজলার হোসেনের কাছে নিয়ে যান। সেখানে ওই কবিরাজ ঝাঁড়-ফুঁক দিয়ে তার পায়ে থাকা বাঁধন খুলে দেন। সেইসঙ্গে বিষ নেমে গেছে বলে লোকজনকে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। তবে রোগীকে এক ঘণ্টা পর ছাড়া হবে বলে জানান তিনি। কিন্তু পায়ের বাঁধন খুলে দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই ইছাহাক আলী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর আরও তিন ঘণ্টা ধরে কবিরাজ ইসাহাক আলীকে ঝাঁড়ফুঁক দেন। একপর্যায় রোগীর অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে এগারোটার দিকে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সটকে পড়ে। পরবর্তীতে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে পরদিন সোমবার সকালে নিহতের স্বজনরা মৃতদেহ দাফনের জন্য প্রস্তুতি নেন। সেই মোতাবেক সকাল ৮টার দিকে তার জানাজা সম্পন্ন করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করেন। এরইমধ্যে আরও দুইজন কবিরাজ ও সাপুড়ে সেখানে উপস্থিত হন। এমনকি সাপে কাটা মৃত রোগী তিনদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকেন জানিয়ে লাশ কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি চান।

নিহতের শ্যালক সম্রাট মিয়া বলেন, কবিরাজদের কথা শুনে কবর থেকে তার দুলাভাইয়ের লাশ উত্তোলন করা হয়। এরপর তাকে বাঁচানোর জন্য ঝাঁড়ফুঁক শুরু হয়। এমনকি সকাল থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত কবিরাজ ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে ব্যর্থ চেষ্টা করেন। একপর্যায় গ্রামের লোকজন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে কবিরাজ পালিয়ে যান। পরে ইসাহাক আলীর দাফন সম্পন্ন করে পরিবারের লোকজন।

জানতে চাইলে সুঘাট ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান জিন্নাহ বলেন, ইসাহাক আলীর জানাজা ও দাফনে উপস্থিত ছিলাম। পরে শুনি কবিরাজ নাকি কবর থেকে তার লাশ উত্তোলন করে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার ব্যর্থ চেষ্টার কারণে নিহতের স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে কবিরাজ পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আবার তার দাফন সম্পন্ন করা হয়।