GuidePedia
আপনার প্রতিষ্ঠানের বহুল প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে এখানে ক্লিক করুন অথবা মেইল করুন: chetonabarta@gmail.com


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহ জেলায় বিএনপি-জামায়াতের ১০ সহস্রাধিক নেতাকর্মী একাধিক মামলার আসামি হয়ে আজ গৃহহীন হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের কেউ বাড়িতে ঘুমাতে পারেন না। অনেকে এলাকা ছেড়ে অন্য জেলায় আত্মগোপন করে রয়েছেন। আবার কেউ দেশ ছেড়েছেন গুম হওয়া বা গুপ্তহত্যার ভয়ে। তৃণমূল পর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াতের বহু নেতাকর্মী আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে পড়েছেন। জামায়াত-বিএনপির অনেক নেতাকর্মীর সংসার প্রায় অচল। মামলা হামলায় জর্জরিত দল দুটির নেতাকর্মীরা এখন বিচ্ছিন্ন। দিক-নির্দেশনা দেয়ার মতো শক্ত কোন নেতা নেই। সবার মোবাইল বন্ধ। টাকা দিতে হবে বলে আর্থিক দুর্দশাগ্রস্ত নেতাদের এড়িয়ে যাচ্ছেন এমন অভিযোগও উঠেছে। এদিকে দলীয়ভাবে কোন সহায়তা না পেয়ে মহেশপুর, কোটচাঁদপুর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বহু নেতাকর্মী জমি বিক্রি করে মামলা চালাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ফলে ঝিনাইদহ শহর ছাড়া আর কোন উপজেলায় বিএনপির দলীয় কর্মসূচি তেমন একটা পালিত হয় না। বসন্তের কোকিল খ্যাত মহেশপুরের নেতারা তৃণমূলের কোন খোঁজ রাখেন না। এমনকি একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত নেতারাও কর্মীদের কোন খোঁজ নিচ্ছেন না। দলীয় কর্মসূচিতে মাঠপর্যায়ের কর্মীদের টাকার জোগান হচ্ছে না। সবখানেই যেন ভাটার টান। ফলে তৃণমূলে হতাশা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। তারা দল পরিবর্তন নয় তো সরকারি দলের সঙ্গে শখ্য রেখে চলছেন। নেতাকর্মীরা গ্রামে বসবাস করলেও হয়ে আছেন নিজ ঘরে পরবাসী। জানা গেছে, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান, জেলা সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক, মুন্সি কামাল আজাদ, আবদুল মজিদ, আবদুল আলীম, জাহিদুজ্জামান মনাসহ নেতৃত্বস্থানীয় অনেকেই এখন আত্মগোপনে। অন্য দিকে দুই বছর ধরে নিরুদ্দেশ রয়েছেন জেলা জামায়াতের আমীর ড. মুজাম্মেল হক। টিকি দেখা যায় না জামায়াত নেতা নুর মোহাম্মদ, অধ্যাপক মতিয়ার রহমান, আবদুল আলীমসহ অন্যদের। জেলা নেতাদের এই আত্মগোপনের রাজনীতি সাধারণ নেতাকর্মীদের চরমভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। বিএনপি ও জামায়াতের জেলা, থানা, পৌর, ওয়ার্ড এমনকি গ্রামের নেতারাও রয়েছেন পুলিশের নজরদারিতে। তাই গ্রেপ্তার এড়াতে অনেকেই পালিয়ে রয়েছেন। ঝিনাইদহের পুলিশ অবশ্য মামলাগুলোকে ‘রাজনৈতিক’ বলতে নারাজ। তাদের ভাষায়, ‘নাশকতা ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াই পুলিশের কাজ’। তবে নাশকতা সৃষ্টিকালে পুলিশ এ পর্যন্ত কাউকে ধরতে না পারলেও চলমান পুলিশি অভিযানে গ্রেপ্তারকৃতদের নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। পুলিশের সন্ত্রাস ও নাশকতাবিরোধী অভিযানে শাসক দল খুশি হলেও টানা দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদস্যরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। রাতদিন সড়ক ও দোকানপাট পাহারা দিতে পুলিশ হিমশিম খাচ্ছে। তবে পুলিশ আন্দোলন ও নাশকতা দমনে ঝিনাইদহে সফল হয়েছে। জানা গেছে, গত ৬ই জানুয়ারি ২০ দলীয় জোটের লাগাতার অবরোধ ঘোষণার পর ঝিনাইদহে কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও পেট্রলবোমা মারার ঘটনা ঘটে। এ সব ঘটনায় মামলা হয়। মামলায় আসামি করা হয় খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মসিউর রহমান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক এবং থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলীমকে। এক মামলায় ঘায়েল হয়ে শহর ছেড়েছেন এসব নেতা। এসব মামলার অন্য আসামিদের অনেকেই এক বা একাধিকবার কারাগারে গেলেও আর্থিকভাবে শক্তিশালী নেতারা জেলের ভয়ে আয়েশী পলাতক জীবন কাটাচ্ছেন। সূত্র মতে, সারা জেলায় ২২ মামলায় বিএনপির ১১০ জন ও জামায়াতের ৯৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। দুই দল থেকে দাবি করা হয়েছে তাদের ১২ শতাধিক নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ ১০ হাজার কর্মীর নামে মামলা হয়েছে।
Comments
0 Comments
 
Top