GuidePedia
আপনার প্রতিষ্ঠানের বহুল প্রচারের জন্য বিজ্ঞাপন দিতে এখানে ক্লিক করুন অথবা মেইল করুন: chetonabarta@gmail.com


স্টাফ রিপোর্টারঃ মানুষ সামাজিক জীব। সমাজ বদ্ধ হয়ে বসবাস করতে গিয়ে মানুষ সামাজিকভাবে কিছু আচার অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। এসব আচার অনুষ্ঠান হতে পারে সামাজিক, গোষ্ঠীগত, ধর্মীয় অথবা বংশানুক্রমিক। সমাজ, গোত্র, দেশ পেরিয়ে আবার কিছু কিছু আচার অনুষ্ঠান পালিত হয়, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কোন কোন দিবস মনকে নাড়া দেয়, কোন কোন দিবস সংগ্রাম করার অনুপ্রেরণা জোগায়। আর এই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দিবসের মধ্যে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস অন্যতম। ভালোবাসা দিবস সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম একটি দিবস। যেখানে ভালোবাসা নিবেদন করার অন্যতম একটি মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ভালোবাসা! এটা হতে পারে সন্তনের সাথে তার পিতা মাতার ভালোবাসা, হতে পরে ভাইয়ের সাথে বোনের ভালোবাসা, হতে পারে তরুণ তরুণীদের মধ্যে মনের সখ্য আদান প্রদানের ভালোবাসা। যা সম্পূর্ণ সম্পর্ক ভেদে নির্ভরশীল। বর্তমান প্রজন্মের কাছে বিশেষ করে তরুণ তরুণীদের মাঝে ভালোবাসর দিনটা এক অন্যরকম অনুভূতি, আগমনী বার্তা নিয়ে আগমন করে। মনকে দোলা দিয়ে আবেগ প্লাবিত করে তোলে। মনের মানুষের সাথে ভালোবাসা নিবেদনে প্রহর গুণতে থাকে। ফুল ফুটুক আর নাইবা ফুটুক আজ বসন্ত। কিন্তু কথাটার কোথায় জানি একটু গলদ আছে। আজ প্রকৃতি তার চার পাশে ছড়িয়েছে বাসন্তী ফুলের সুরভী। ফাগুনী হাওয়ার দোলায় উদ্বেলীত হচ্ছে নরম প্রকুতির সরল মন। ফাগুনের হাওয়ায় হাওয়ায় আজ বাঙালির হৃদয়ে লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। সব বয়সী নারী-পুরুষের বাসন্তী সাজ আর দেশের নানা প্রান্তে নানারকম আনন্দ-অনুষ্ঠান মিলে গোটা দেশই যেন রাঙ্গিয়ে ছিল বসন্তের রঙে। ফুল আজ ফুটতেই হবে, আজ যে বসন্ত। সকালের এ সূর্য যেন নতুন কিছু বলতে চাইছে কানে কানে। মেঘমুক্ত স্বর্ণালী আকাশ, আর তার পাশাপাশি শিশিরের ঝরে পরা জানান দিচ্ছে আর বাকি নেই হিম শীতের। চারদিকে থেমে থেমে বয়ে চলা দক্ষিণা হাওয়ার মাতাল করা সুর। শীতের চাদর ছিড়ে আলোর দিকে মাথা তুলেছে নানা রঙের ফুল। পলাশ ফুলে পাখির নাচান। শিমুল, গাঁদা, মালতী, মাধবী, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়াসহ হাজারো নাম না জানা ফুলের নেশা রাঙিয়ে তুলেছে মানুষের মনকে। এমন রূপের নেশা থেকে কিভাবে বাঁচবে মৌমাছি, কীটপতঙ্গ বা প্রজাপতি। নানা রঙের প্রজাপতি তাই মধু আহরণে ব্যস্ত। ফুলকে ঘিরে এদের উড়াউড়ি তৈরি করে এক অনিন্দ্য সৌন্দর্যের। বাতাসে পাতা ঝরার শব্দ। প্রকৃতি একটু একটু করে পাল্টে যাচ্ছে সবুজে। কচি পাতা মনে করিয়ে দিচ্ছে প্রকৃতিতে এসেছে যৌবন। যে নতুন যৌবনের দোলায় দুলছে প্রকৃতি তার স্বরুপ রুপে। সে যেন পেয়েছে আজ নতুন জীবন। বড়ই উচ্ছসিত সে আজ। বাঁধন হারা আনন্দে ভাসছে, কে রুখবে তাকে। আর, চলতি পথে দেখা মিলবে আমের মুকুলের। তার রূপ আর চেনা গন্ধ জানিয়ে দেয় প্রকৃতির রাজ্যে রাজা বসন্ত আসছে তার আভিজাত্য নিয়ে। বাদ যাবে না কাঠালও। পুরো গাছ জুড়ে দেখা যাবে কাঠালের মুচি। কোকিল ছাড়া যে অপূর্ণ থেকে যাবে ফাল্গুনের আগমণ। হ্যাঁ, কোকিলের সেই ডাক শোনা যাচ্ছে বন-বনানীতে। প্রকৃতিপ্রেমীদের চোখে এ ঋতু যেন এক নেশার নাম। ভালোবাসা দিবসে ব্যতিক্রম এক চিত্র দেখা গেল  মহাস্থান ও এর আশপাশের এলাকায়। স্কুল কালেজগামী ছাত্র/ছাত্রীদের মাঝে ভালোবাসা যেন নিয়ে এসেছে অন্যরকম এক অনুভূতি। আনন্দে উচ্ছসিত সবাই। ফুল ছাড়া যেন ভালোবাসা নিবেদন অপূর্ণ। তাইতো একদিন আগেও যারা ভ্যানে করে সবজির ব্যবসা চালিয়ে আসলো। তারাই যেন ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে ভ্যান ভর্তি ফুল নিয়ে তরুণ তরুণীদের ভালোবাসা নিবেদনে একধাপ সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসলো। মহাস্থান জাদুঘর, মহাস্থান মাজার এলাকা, ঐতিহাসিক বেহুলার বাসর ঘর তরুণ তরুণীদের পদচারণায় মুখরিত। প্রেমিক যুগলরা একে অপরের জন্য ফুল কিনছেন ভ্যান গাড়ি থেকে। এমনি এক প্রেমিক যুগল জানান, আমরা দুটি ফুল কিনেছি চল্লিশ টাকা দিয়ে। এই ফুল দিয়েই আমরা একে অন্যকে ভালোবাসার দিবসের শুভেচ্ছা জানাবো। এই দিনটির মতো প্রতিটি দিন যদি তাদের কাছে আসতো, জীবনে তারা খুব সুখ অনুভব করতো।  কারো প্রেমের সম্পর্ক নতুন, কারো বা দির্ঘদিনের। তবে অনেকের ধারণা রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অনেক দম্পতি বা জুটি ঘর থেকে বের হননি। তারা ঘরে বসেই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভালোবাসার শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন। শুধু তরুণ তরুণীদের মাঝেই ভালোবাসা নিবেদনের মাধ্যমে ভালোবাসা দিবস পালিত না হোক। ভালোবাসা নিবেদন হোক প্রত্যেক মানবের মাঝে। একে অন্যের সাথে। প্রত্যেকে যার যার অবস্থান থেকে সম্পর্ক ভেদে একে অন্যের মাঝে ভালোবাসা প্রকাশ করুক। ভূলে যাক সকল ব্যক্তিগত হিংসা বিদ্বেষ।
( আকাশ মহাস্থান (বগুড়া) প্রতিনিধি: ১৪-০২-২০১৫ইং )
Comments
0 Comments
 
Top